স্বাস্থ্য
ডায়েটে চিট-মিল
By ফাহমিদা হাশেম
August 27, 2021 at 10:30 AM
কড়া ডায়েট করেও একদিন খেতে পারেন পছন্দের খাবারকড়া ডায়েট করেও একদিন খেতে পারেন পছন্দের খাবার
যাঁরা ডায়েট করছেন, তাঁদের পছন্দের অনেক খাবারই বর্জন করতে হয়। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস মেপে খাওয়া আর মুখরোচক খাবার বর্জন করে চলা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় একসময়। তাই যাঁরা ডায়েট করেন, তাঁরা প্রতি এক–দুই সপ্তাহে একবার ডায়েটের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাঁদের পছন্দের এক–দুটি খাবার পরিমিত পরিমাণে খেতে পারবেন। এই খাবারকেই বলা হয় চিট–মিল।
অনেকেই একে চিট-ডে বলে ভুল করে থাকেন; কারণ, ওই দিন কিন্তু আপনি আপনার পছন্দের খাবার খেতে পারবেন না। শব্দটি হবে চিট–মিল। অর্থাৎ সেই দিনটিতে আপনি আপনার দৈনন্দিন তালিকার বাইরেও পছন্দের দু-একটি খাবার একবারই খেতে পারবেন। ব্যক্তির ওজন কমানোর লক্ষ্যে ও শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে চিট–মিলের সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে।
ডায়েট চলাকালে অ্যান্টি-স্টারভেশন হরমোন লেপটিনের (রুচি ও তৃপ্তি নিয়ন্ত্রণকারী) পরিমাণ কমতে থাকে এবং অন্যান্য হরমোনেও অসমতা দেখা দেয়। তাই সপ্তাহে একবার চিট–মিল রাখলে শরীরে লেপটিনের পরিমাণ বাড়ে, যা সামগ্রিক বিপাকের হার বাড়ায়। অর্থাৎ বিপাকের সঙ্গে জড়িত সব হরমোনের মধ্যে সমতা তৈরি হয়, ইনসুলিন নিঃসরণে ভারসাম্য রক্ষা হয়, শরীরে গ্লাইকোজেনের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে পর্যাপ্ত শক্তি তৈরি হয়।
সাধারণত আমাদের মস্তিষ্ক শরীরের সব চর্বিযুক্ত কোষকে সিগন্যাল দেয় ফ্যাটি অ্যাসিডগুলোকে রক্তে নিঃসরণের জন্য। মাংসপেশি, হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুস রক্ত থেকে এসব ফ্যাটি অ্যাসিড সংগ্রহ করে কাজে লাগায়। চিট–মিল এই সামগ্রিক ফ্যাট টর্চিং প্রক্রিয়াকে বাড়িয়ে ফ্যাটকে কাজে লাগায়। অনেকে আবার চিট–মিলে উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন খাবার নেন। এতে নিষিদ্ধ খাবারগুলোর প্রতি আকর্ষণ অনেক বেড়ে যায়। ফলে ডায়েটের দিনগুলোয় নিয়ন্ত্রণে থাকা আরও কষ্টকর হয়ে যায়।
চিট–মিলের সর্বোচ্চ সফলতা কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যেমন চিট–মিল মাসে কতবার ও কোন সময়ে নিতে হবে, কী ধরনের খাবার রাখতে হবে, পরিমাণ কতটা হবে, এই খাবার নেওয়ার আগে ও পরে করণীয় কী—এসব বিষয়ে সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে। খুব বেশি ক্ষুধার্ত অবস্থায় চিট–মিল খাওয়া ঠিক নয়। চিট-মিল নেওয়ার এক-দুই ঘণ্টা আগে উচ্চমাত্রার প্রোটিন, ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ খাবার ও সবুজ সালাদ খেয়ে নিতে হবে। চিট-মিলে ট্রান্সফ্যাট ও লিকুইড সুগারসমৃদ্ধ খাবার রাখা যাবে না। এই খাবার খাওয়ার পর পর্যাপ্ত কুসুমগরম বা লেবুপানি পান করতে হবে। কখনো দাওয়াত বা খাবারের অন্য কোনো অনুষ্ঠানে থাকলে সেদিনের খাবারকে চিট-মিল হিসেবে ধরে নিতে হবে। তবে আপনার ডায়েটের উদ্দেশ্য ও ধরন অনুযায়ী চিট-মিল মাসে কয়টা হবে, তা একজন পুষ্টিবিদই নির্ধারণ করে দেবেন
0 Comments