ঘুরে দেখুনঃ সাগর কন্যা কুয়াকাটা
মমিনুল ইসলাম মোল্লা
ঢাকা থেকে পটুয়াখালির দূরত্ব ৩৯০ কিঃ মিঃ। পটুয়াখালী শহর কুয়াকাটার দূরত্ব ৭০ কিঃ মিঃ। লতাচাপালী ইউনিয়নেই এই বিখ্যাত স্থানটি অবস্থিত। স্থল পথে অতি সহজেই আপনি পটুয়াখালীতে যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে সরাসরি কুয়াকাটার বাস আছে , সাকুরা পরিবহন, সবচেয়ে ভালো , দ্রুতি পরিবহন। গাবতলি থেকে কুয়াকাটা যাওয়ায় অনেক বাস আছে। ভাড়া সরাসরি হলে ৬৫০+ । আর আপনি যদি ভেঙ্গে ভেঙ্গে যেতে চান তাহলে ৩ বার বাস বদলে ৫০০ টাকার মধ্যেই যেতে পারবেন ।যা যা দেখবেনঃ
সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের দৃশ্য অবলোকনঃ আপনি যদি বেলা ডুবার আগে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় পৌছঁতে পারেন তাহলে আপনার জন্য বিশেষ সুবিধা হবে। কয়েকজন মিলে ্অথবা আপনার প্রিয়জনকে পাশে রেখে আপনি গোধূলীর পূর্বে অবলোকন করবেন স্বর্গীয় দৃশ্য। আমরাত প্রায়শঃই সূর্য ডুবার দৃশ্য অবলোকন করি কিন্তু এদিনের সূর্যকে আপনার কাছে অন্য আট-দশ দিনের মতো মনে হবে না। মনে হবে এই সূর্যাস্ত সত্যিই অনন্যা, আফসোস হবে আরা আগে কেন এলেন না। পরদিনের সুর্যোদয়ের দৃশ্য দেখার জন্য আপনার ঘুম হবেনা। গতদিন হারিয়ে যাওয়া সুর্যকে আপনি নতুন রুপে আবিষ্কার করবনে একই স্থানে দাড়িয়ে। এই সমুদ্র সৈকতের আয়তন ১৮ কিঃ মিঃ।
কুয়া প্রদর্শনঃ অতঃপর আপনি চলে আসুন বৌদ্ধ পাড়ায়। এখানেই রয়েছে কুয়াকাটার অন্যতম আকর্ষন। কুয়াকাটার বিখ্যাত কুয়াটি শ্রীমঙ্গল বিহার যাওয়ার পথ আপনার চোখে পড়বে। দুই শতাধিক বৎসর পূর্বেও খননকৃত ঐ গভীরতা প্রায় ১৫ ফুট। ইটের উপর ইট গেথ এই কুয়া নির্মিত হয়েছে। বর্তমানে রিং এর সাহায্যে কুয়া নির্মান করা হয়। এ কুয়ার পানি শুধু পানের জন্য ব্যবহার করা হয়। কুয়া নির্মানের উদ্দেশ্য ছিল সাগরের পানির পরিবর্তে সুপেয় পানি পান করা। তাই তখনকার অধিবাসীরা সবাই মিলে তৈরী করে এই বিখ্যঠু কুয়া। যার নামে জায়গার নাম কুয়াকাটা। কুয়াকাটার পাশেই রয়েছে অপর একটি চৌবাচ্চা সদৃশ কুয়া)। অনেক দিন পর এই কুয়া নির্মান হয়। সে কুয়ার পানি গোসল ও কাপড় চোপড় ধোয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়। কুয়ার পানি যাতে দূষিত না হয় সেজন্য ছাদ নির্মাণ করা হয়।
রাখাইন সংস্কৃতিঃ কুয়াকাটায় বাস করে বাংলাদেশের একটি বিশাল উপজাতি। আপনি তাদেও সংস্কৃতি সর্ম্পকে জানতে পারবেন। তাদের সর্ম্পকে খোঁজ নিলে জানতে পারবেন ২৫০ বছরের বেশী সময় পূর্বে ইংরেজ শাসনের আগে মুঘল আমওে রাখাইনরা বার্মা থেকে বিতারিত হয়ে কেহ কেহ ভ্রমণ ও বাণিজ্যেকজনিত কারণে সাম্পানে কওে কুয়াকাটায় এসে পৌছেন। সাগর তীওে নোঙ্গর করেই তারা ঐ স্থানের নাম রাখে কানসাই অর্থ্যাৎ ভাগ্যক‚ল। পরবর্তীতে মিষ্টি পানির জন্য ইন্দিরা বা কুয়া খননের পর পাল্টে যায়।
বাগান প্রদর্শনঃ আপনি রাখাইনদেও ভিন্ন ধারর সংস্কৃতির সাথে পরিচিতি লাভ করার পর ফিরোজ মিয়ার নারিকেল বাগান দেখবেন। সাগর সৈকতের কোল জুড়ে রয়েছে সারি সারি নারিকেল গাছ। ফলবর্তী নারিকেল গাছগুলো পাতা বাতাসে ঢেউয়ের তালে তালে সর্বদা দুলছে। ফিরোজ মিয়া পাকিস্তান আমলে ২১০ একর জমি লিজ নিয়ে বাগান করেন। বর্তমানে সেখানে ত হাজার ৫শ নারকেল গাছ এবং ১৫শ চারা আছে। সাগর তটে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে গেলে আপনি গাছতলে এসে শান্তির নির্যাস নিতে পারেন। ঝিরঝিরে বাতাস আপনার সকল ক্লান্তি মুছে দেবে।
মিনি সুন্দরবনঃ মহীপুর থেকে স্পিডবোটে আধা ঘন্টার পথ পেরুলে আপনি দেখতে পাবেন মিনি সুন্দরবন। একে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় পাত্রার বন। এই বনে রয়েছে হরিণ আর বানরের অবাধ বিচরণ। নদী আর খালে কুমিরের সাচ্ছন্দ্য চলাচল। এখানে যেসব গাছ আছে সেগুলোর মধ্যে কেওরা, কাঁকড়া, সুন্দরী, গরান, সইলা , বনজাম, গেওয়া, গাব, করন্ডা, সোনালু, হাডগড্ডা, হোগলা, গোলপাতা, লোনা ইত্যাদি। পাঁচ হাজার একর নিয়ে পাত্রার এই বনাঞ্চল। বন সংলগ্ন চর রয়েছে কয়েকটি। যদি শীতকালে যান তাহলে আপনি সেখানে বিদেশ থেকে আগত নানা রং বেরঙের পাখী দেখতে পাবেন। তাছাড়া বানরের কিচ মিচ শব্দও শুনতে পাওয়া যাবে।
বৌদ্ধমূর্তিঃ এখানে আপনি দেখতে পাবেন দেশের বৃহত্তম বৌদ্ধ মূর্তি। সাগর সংলগ্ন উপক‚লে রক্ষা বাধের পাশেই একটি সাধারন মানের মন্দির রয়েছে। এই মন্দিরেই অবস্থিত দেশের সর্বাসেরা বৌদ্ধ মূর্তি। এ মূর্তিটির উচ্চাতা ৭ ফুট এবং ওজন ৩৭ মণ। একশ বছরেরও আগে এই মূতিটি এখানে ছিল। আড়াইশ বছরেরও আগে রাখাইনরা এখানে আসে। এই মূর্তি তখনকার কিনা সে ব্যাপারে সুস্পট ধারণা পাওয়া যায়না।
বোটিংঃ পর্যটকরা কুয়াকাটায় বোটিং করতে পারেন। ইচ্ছে করলেই সকল দুঃখ যন্ত্রনা ভুলে গিয়ে আপনি প্রিয়জনকে নিয়ে স্বল্পকালীন নৌবিহারে যেতে পারেন। তালতলী থানা বাদেও পাশাপাশি অন্য দুটি থানাতেও রয়েছে পযঅঅঃপনর হাজারো স্পট। তাই কুয়াকাটা দেখতে গিয়ে আপনি বোনাস হিসাবে মনোরম গঙ্গামতি, ধুলাসার, কাতিয়ার চর, লালদিয়া, লাঠিমারা, খাজুরা এবং ফাতরাসহ বিভিন্ন বণাঞ্চল ঘুরে আসতে পারেন।
যেখানে থাকবেনঃ আপনারা সারা দিন ঘুরেফিরে মোটেলে কিংবা হোটেলে উঠতে পারেন। পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল আপনারা ঢাকা থেকেই বুক করতে পারেন। মোটেলের পাশে রেস্তোরা রয়েছে। শীতাতাপ নিয়নিন্ত্রত কক্ষে ভাড়া পড়বে ৬৫০ টাকা এবং সাধারণ সীট ১৫০ টাকা।
সোনার চরঃ যদি হাতে আরো কিছু সময় থাকে তাহলে আপনি সোনার চর ও ঘুরে আসতে পারেন। গলাটিপা থানা থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১শ কিঃ মিঃ। বঙ্গোপসাগরের প্রান্ত ছুঁয়ে বুড়া গৌরাঙ্গ নদীর উৎসমুখে এর অবস্থান। এখানে চার হাজার কিঃ মিঃ বণাঞ্চল রয়েছে। বর্তমানে কুয়াকাটায় দেশী পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশী পর্যটকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৮৭ সালে কুয়াকাটাসহ এদেশের বিশটি স্পটে বিদেমী পর্যটক এসেছিল এক লাক্ষ ৬ হাজার সাতশ ৬৫ জন। বর্তমানে পর্যটন কর্পোরেশন পর্যটকদের থেকে বছরে আয় করছে প্রায় চার কোটি টাকা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে , বাংলাদেশের অন্যান্য পর্যটন স্পটের ন্যায় আলোচ্য কুয়াকাটায়ও রয়েছে হাজারো সমস্যা। কুয়াকাটার একাংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
কোথায় থাকবেন :বেশ ভালো মানের হোটেল আছে । নন এসি ডবল ৭০০ থেকে শুরু । একটু খারাপ হোটেল ও আছে। হোটেল ঠিক করার সময় দেখবেন কোনটি সমুদ্র থেকে কাছে। কারণ বাতাস বেশি পাবেন।সমুদ্রের কাছে - - হোটেল নিলাঞ্জনা , হোটেল গ্রেভার ইন , হোটেল সৈকত, স্কাই কটেজ ,(৫০০ টাকা ডবল) । সমুদ্র থেকে একটু ভিতরে - - কুয়াকাটা ইন , বীচ হেভেন , হোটেল মোহনা , পর্যটন মোটেল নিম্ন মানের - - হোটেল উদয় অস্ত , হোটেল সাগর , সমুদ্র বিলাস ( ভাড়া ৩০০+ ডবল বেড)।
লেখক: মমিনুল ইসলাম মোল্লা, প্রভাষক, ক্যাম্পেনার সিডিএলজি এবং সহকারী সম্পাদক , (দৃষ্টান্ত ডট কম), কুমিল্লা
1 Comments
Harrah's Cherokee Casinos & Gaming Deals | MJH
ReplyDeleteHarrah's Cherokee Casino & Gaming - Harrah's Cherokee has the most 파주 출장샵 slots, 인천광역 출장샵 video 세종특별자치 출장안마 poker, table 경상남도 출장마사지 games, and video poker in 대구광역 출장안마 the business.