সুন্দরবনঃ
সুন্দরবনকে ১৯৯৭ সালে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণাংশের জেলা খুলনা ,সাতক্ষীরা ,বাগেরহাট ,পিরোজপুর ও বরগুনা জেলা জুড়ে অবস্থিত। সবুজ অরণ্যে পল্লবিত সুন্দবেনে গেলে আপনাকে স্বাগতম জানাবে চিত্রল হরিণ, বনমোরগ , বানর কিংবা অন্য কোন প্রাণী। ভাগ্য ভাল হলে ”বড় মামার” সাথেও দেখা হয়ে যেতে পারে। হ্যাঁ বাঘকে ওখানকার লোকেরা এই নামেই ডাকে। তবে সাবধান বড় মামার সাথে দেখা করতে গেলে কুপোকাত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। তাই গাইডের পরামর্শ অনুযায়ী পথ চলুন। গাইডের মুখে হয়তো শুনবেন-সুন্দরী গাছের নামানুসারে এবনের নামকরন করা হয়েছে সুন্দর বন। পুরো বনের আয়তন ১০০০০ বর্গ কিলোমিটার তবে বাংলাদেশের আওতাধীন রয়েছে ৬০১৭ কিলোমিটার। মংলা দিয়ে প্রবেশ করলে টাইনমারিতে দেখবেন বন বিভাগের এটি কার্যালয় রয়েছে। বিদেশী পর্যটকগন ৭০০ টাকা প্রবেশ ফি দিয়ে প্রবেশ করতে হয়। বন বিভাগের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জানবেন-এবনে আছে ৫০০ বাঘ,৩০০০০ চিত্রল হরিণ , ৩৩০ প্রজাতির গাছ , ২৭০ প্রজাতির পাখি ,১৪ প্রজাতির সরীসৃপ ,৪২ প্রজাতির বন্য প্রাণী , ৩২ প্রজাতির চিংঢ়িসহ ২১০ প্রজাতির মাছ। এখানকার হিরণ পয়েন্টে, দুবলার চর , শরণখোলা , ছালকাটা , টাইগার পয়েন্টে , সিবিচ , সাত নদীর মুখ ও কালিরচওে গিয়ে সুন্দরবনের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করতে পারেবেন। ”বুড়ি গোয়ালিনি রেঞ্জে গেলে মৌয়ালীদেও মধু সংগ্রহ দেখতে পাবেন। তারা মধু সংগ্রহের আগে সমবেত প্রার্থনায় মিলিত হন। তারপর দল নেতা প্রত্যেকের ডান হাতে লাল কাপড় বেঁধে দেন। তাদের বিশ্বাস এটি তাদেরকে বাঘের হাত থেকে রক্ষা করবে। তারপর তারা দল বেঁধে নৌকাযোগে বের হয়ে যান। মৌয়ালরা মৌমাছির গতিবিধি লক্ষ্য করে মৌচাকের সন্ধান করেন। তারপর মৌচাক কেটে আনেন। যদিও সুন্দরবনে বাঘ শিকার নিষেধ তবুও শিকারীদের দেখবেন গাছে উঠে তারা কিভাবে বাঘিনিদের সুরে বাঘকে ডেকে ফাঁদে ফেলে শিকার করে। এছাড়া কাঁঠুরিয়াদের দেখবেন ৮/১০ ফুট উঁচু গাছের উপরে কিভাবে বাসা বেঁধে বসবাস করছে।যেভাবে যাবেনঃ বিদেশী বন্ধুরা একা একা সুনদরবনে না যাওয়াই ভাল। কোন পর্যটক সংস্থার দ্বারস্থ হলে ভাল হয়। ৫ রাত ৪ দিনের প্যাকেজে ১৫০০০ টাকা খরচ হবে। ভাল কোন হোটেলে থাকতে হলে আপনাকে খুলনা শহরে যেতে হবে। এছাড়া বন বিভাগের রেস্ট হাউজেও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। আপনি ইচ্ছে করলে সেখানেও অবস্থান করতে পারেন।
0 Comments