মমিনুল ইসলাম মোল্লা চুনা পাথর আর কয়লার দেশ জয়পুর হাট। এছাড়া প্রাচীনকালের দিঘি, মসজিদ ও মাজার দেখার জন্য আপনি যেতে পারেন জয়পুর হাটে। আপনি ঢাকা থেকে জয়পুর হাটে যাওয়ার জন্য সরাসরি বাস রয়েছে। গাবতলী থেকে বাস ছাড়ে। সকাল ৮টায় বাসে উঠলে দুপুর দেড়টার মধ্যে জয়পুরহাটে পৌঁছে যাবেন।
জয়পুর থেকে জয়পুরহাট নামটির উৎপত্তি। পাল বংশীয় বিখ্যাত রাজা জয়পাল। তাল নামানুসারে নাম হয়েছে জয়পুর হাট। বৃটিশ আমলে এ স্থানটি বন জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। ১৯৭১ সালের মহকুমা শহরটি ১৯৮৪ সালে জেলা শহরে পরিণত হয়। জয়পুরহাটের উত্তরে দিনাজপুর দক্ষিণে বগুড়া পূর্বে গাইবান্ধা এবং পশ্চিমে নওগাও ভারতের পশ্চিম বঙ্গ অবস্থিত। দর্শনীয় স্থানসমূহঃ ১) নান্দাইল দিঘিঃ পর্যটকদের তীর্থ ভ‚মি কালাই। এ থানার নান্দাইল দিঘি পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। বগুড়া-জয়পুরহাট সড়কের পুণট বাস স্টপেজ নামে ১ কিঃমিঃ পশ্চিমে গেলে নান্দাইল দিঘি দেখতে পাবেন। দিঘিটি প্রায় ৪শ বছরের পুরনো তৎকালীন সময়ে পানীয় জলের অভাব পূরণের জন্য এই দিঘিটি খনন করা হয়। দিঘিটি খনন করেন সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম দশকের রাজা নন্দ লাল। জলকর ও পাড়সহ এ দিঘিটির আয়তন ১শ’কর। বিশালকার দিঘিটি পানিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ থাকে। দিঘির বিস্তীর্ণ জলরাশি আপনার মনকে জুড়িয়ে দেবে। দিঘির পাড়ে না হয় একটু বসুন, ভাল লাগবে। ২) মুকসীদ গাজীর মাজারঃ কালাই থানা সদর থেকে দেড় কিঃমিঃ দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে হারাজ্ঞা গ্রামে চির নিন্দ্রায় শায়িত হয়ে রয়েছেন। মুকসীদ গাজী (রহঃ) চতুর্দশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে তিনি এখানে এসেছেন বলে ধারণা করা হয়। ইট নির্মিত দক্ষিণ দুয়ারী একটি কক্ষে এই মহান সাধকের মাজারটি অবস্থিত। মাজারটির চারদিকে বাউন্ডারী ওয়াল দেওয়া রয়েছে। উক্ত গ্রামের মেহের উদ্দিন আহমেদ এলএলবি পাসে পর গ্রামে পাখী শিকারে বের হয়ে মাজারের পাশের একটি গাছের ডালে বসা পাখীকে গুলি করার সাথে সাথে বুকে প্রচন্ড ব্যাথা হয় এবং মুখ দিয়ে রক্ত পড়ে। রাতে তার পিতা স্বপ্নে দেখেন এক ব্যক্তি বলছে তোমার পুত্র ভালই শিকারী হয়েছে। তিনি সকালে মাজারে গিয়ে ক্ষমা চান এবং পুত্র সুস্থ্য হয়ে উঠে। মাজারের পাশেই একটি মসজিদ ঈদগাহ এবং একটি পুকুর আছে। পুকুরে প্রচুর মাছ আছে। উৎসুক ব্যক্তিরা বিস্কুট বা অন্য খাবার দিতে চাইলে মাছগুলো একেবারে কাছে এসে খাদ্য গ্রহণ করে। ৩) হিন্দাশাহী মসজিদঃ ক্ষেতলাল থানার দেখবেন একটি অনুপম সৌন্দর্যমন্ডিত মসজিদ। হযরত খঅজা শাহ আব্দুল খালেক চিশতী (রহঃ) এর ঐকান্তিক চেষ্টায় মসজিদটি গড়ে উঠে। বাংলা ১৩৬৫ সালে আব্দুল গফুর চিশতি (রহঃ) এর ঐক্যন্তিক চেষ্টায় মসজিদটি গড়ে উঠে। বাংলা ১৩৬৫ সালে আব্দুল গফুর চিশতি (রহঃ) এর ঐকান্তিক চেষ্টায় মসজিদটি গফুর চিশতি (রহঃ) সালে আব্দুল গফুর চিশতি (রহঃ) মসজিদটির নকশা তৈরী করেন। বারান্দা বাদে শুধু নামাজ কোঠার দৈর্ঘ্য সাড়ে ২৯ ফুট ও প্রস্থ সাড়ে ২২ ফুট। সামনের খিলানগুলো বেশ চমৎকার। এতে ৫টি গম্ভুজ রয়েছে। মাঝখানের বড় গম্ভুজটির ভিতরের দিকে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে আয়তুল কুরসী লিখা রয়েছে। সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য কাজ, চিনামাটি ও মোজাইক পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। উত্তর পূর্ব কোনে রয়েছে ৪০ ফুট উচুঁ মিনার। ৪) একাত্তরের বধ্যভ‚মিঃ ১৯৭১ সালের বীর শহীদদের বধ্যভ‚মি দেখতে পাবেন জয়পুরহাট শহরের ১৫ কিঃ মিঃ উত্তর পশ্চিমে। যুদ্ধকালীন সময়ে এখানে পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প ছিল। যুদ্ধ শেষে এখানে অসংখ্য মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া যায়। প্রায় ১০ হাজার লোককে নিমর্মভাবে হত্যা করে এখানে মাটি চাপা দেওয়া হয় বলে স্থানীয় লোকদের মুখে শুনবেন। ৫) শহরের আশেপাশের জয়পুরহাট ছোট জেলা শহর। এখানে বৃটিশ আমলে নির্মিত খাস মহল ভবন আর নীলকর সাহেব পিটারের বাংলো দেখতে পাবেন। সিমেন্ট ফ্যাক্টরী আর চিনি কল আপনাকে হাত ছানি দিয়ে ডাকবে। তাই এই দুই জায়গায় যাওয়ার জন্য কিছু সময় হাতে রাখবেন। বাসে চড়ে জামালগঞ্জে যাবেন। সময় লাগবে ২০ মিঃ, এখানে দেখবেন কয়লার খনি। ৬) পাথরঘাটার প্রতœতত্ত¡ঃ পাথরঘাটা পাঁচ বিবি থানায় অবস্থিত। এটি আটপাড়া ইউনিয়নে আবস্থিত। তুলসীগঙ্গা নদীর দুই পাড়ে অজ¯্র পাথরের টুকরো ও দেয়ালের গাথুুনি ছরিয়ে আছে। অনুমতি হয় এখানে ২৫ মিটার লম্বা একটি পাথরের সেতুর অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল। চারপাশে ৪ কিঃ মিঃ এলাকা জুড়ে প্রতœ ঢিবির অস্তিত্ত¡ও বিদ্যমান। ৭) পাঁচ বিবির মাজারঃ পাঁচ বিবির মাজার দেখুন পাঁচ বিবি সদরে। এটি শহর থেকে ১০ কিঃ মিঃ উত্তরে ১৭০০ সালের দিকে পাঁচজন ধর্মপ্রাণ মহিলা ছিলেন। আমাদের দেশের অধিকাংশ জায়গায় পুরুষ মহিলার মাজার। জয়পুরহাটে গিয়ে জানবেন সেখানে জন্ম গ্রহণ করেছেন কবি আতাউর রহমান, কণ্ঠ শিল্পী ফাতেমাতুজ জোহরা, শাহ নজরুল ইসলাম, ডাঃ ফরিদ উদ্দিন, খুরশীদ আলম, মিজানুর রহমান ও নাদিরা বেগম। জয়পুরহাট গিয়ে দিনে দিনে ফিরতে পারবেন না। তাই সেখানে গিয়েই একটি ভাল আবাসিক হোটেল দেখ নিন। হোটেল আল জসিম, সৌরভ, শাপলা, কিংবা আল আমিনি উঠতে পারেন। আপনি একা ভ্রমণে গেলে যাওয়ার সময় আপনি জয়পুরহাট রেলওয়েযোগে ঢাকা য়িরতে পারেন।
Post a Comment
0
Comments
Home
»
»Unlabelled
» ঘুরে দেখুন রাজা জয়পালের জয়পুরহাট
মমিনুল ইসলাম মোল্লা চুনা পাথর আর কয়লার দেশ জয়পুর হাট। এছাড়া প্রাচীনকালের দিঘি, মসজিদ ও মাজার দেখার জন্য আপনি যেতে পারেন জয়পুর হাটে। আপনি ঢাকা থেকে জয়পুর হাটে যাওয়ার জন্য সরাসরি বাস রয়েছে। গাবতলী থেকে বাস ছাড়ে। সকাল ৮টায় বাসে উঠলে দুপুর দেড়টার মধ্যে জয়পুরহাটে পৌঁছে যাবেন।
জয়পুর থেকে জয়পুরহাট নামটির উৎপত্তি। পাল বংশীয় বিখ্যাত রাজা জয়পাল। তাল নামানুসারে নাম হয়েছে জয়পুর হাট। বৃটিশ আমলে এ স্থানটি বন জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। ১৯৭১ সালের মহকুমা শহরটি ১৯৮৪ সালে জেলা শহরে পরিণত হয়। জয়পুরহাটের উত্তরে দিনাজপুর দক্ষিণে বগুড়া পূর্বে গাইবান্ধা এবং পশ্চিমে নওগাও ভারতের পশ্চিম বঙ্গ অবস্থিত। দর্শনীয় স্থানসমূহঃ ১) নান্দাইল দিঘিঃ পর্যটকদের তীর্থ ভ‚মি কালাই। এ থানার নান্দাইল দিঘি পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। বগুড়া-জয়পুরহাট সড়কের পুণট বাস স্টপেজ নামে ১ কিঃমিঃ পশ্চিমে গেলে নান্দাইল দিঘি দেখতে পাবেন। দিঘিটি প্রায় ৪শ বছরের পুরনো তৎকালীন সময়ে পানীয় জলের অভাব পূরণের জন্য এই দিঘিটি খনন করা হয়। দিঘিটি খনন করেন সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম দশকের রাজা নন্দ লাল। জলকর ও পাড়সহ এ দিঘিটির আয়তন ১শ’কর। বিশালকার দিঘিটি পানিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ থাকে। দিঘির বিস্তীর্ণ জলরাশি আপনার মনকে জুড়িয়ে দেবে। দিঘির পাড়ে না হয় একটু বসুন, ভাল লাগবে। ২) মুকসীদ গাজীর মাজারঃ কালাই থানা সদর থেকে দেড় কিঃমিঃ দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে হারাজ্ঞা গ্রামে চির নিন্দ্রায় শায়িত হয়ে রয়েছেন। মুকসীদ গাজী (রহঃ) চতুর্দশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে তিনি এখানে এসেছেন বলে ধারণা করা হয়। ইট নির্মিত দক্ষিণ দুয়ারী একটি কক্ষে এই মহান সাধকের মাজারটি অবস্থিত। মাজারটির চারদিকে বাউন্ডারী ওয়াল দেওয়া রয়েছে। উক্ত গ্রামের মেহের উদ্দিন আহমেদ এলএলবি পাসে পর গ্রামে পাখী শিকারে বের হয়ে মাজারের পাশের একটি গাছের ডালে বসা পাখীকে গুলি করার সাথে সাথে বুকে প্রচন্ড ব্যাথা হয় এবং মুখ দিয়ে রক্ত পড়ে। রাতে তার পিতা স্বপ্নে দেখেন এক ব্যক্তি বলছে তোমার পুত্র ভালই শিকারী হয়েছে। তিনি সকালে মাজারে গিয়ে ক্ষমা চান এবং পুত্র সুস্থ্য হয়ে উঠে। মাজারের পাশেই একটি মসজিদ ঈদগাহ এবং একটি পুকুর আছে। পুকুরে প্রচুর মাছ আছে। উৎসুক ব্যক্তিরা বিস্কুট বা অন্য খাবার দিতে চাইলে মাছগুলো একেবারে কাছে এসে খাদ্য গ্রহণ করে। ৩) হিন্দাশাহী মসজিদঃ ক্ষেতলাল থানার দেখবেন একটি অনুপম সৌন্দর্যমন্ডিত মসজিদ। হযরত খঅজা শাহ আব্দুল খালেক চিশতী (রহঃ) এর ঐকান্তিক চেষ্টায় মসজিদটি গড়ে উঠে। বাংলা ১৩৬৫ সালে আব্দুল গফুর চিশতি (রহঃ) এর ঐক্যন্তিক চেষ্টায় মসজিদটি গড়ে উঠে। বাংলা ১৩৬৫ সালে আব্দুল গফুর চিশতি (রহঃ) এর ঐকান্তিক চেষ্টায় মসজিদটি গফুর চিশতি (রহঃ) সালে আব্দুল গফুর চিশতি (রহঃ) মসজিদটির নকশা তৈরী করেন। বারান্দা বাদে শুধু নামাজ কোঠার দৈর্ঘ্য সাড়ে ২৯ ফুট ও প্রস্থ সাড়ে ২২ ফুট। সামনের খিলানগুলো বেশ চমৎকার। এতে ৫টি গম্ভুজ রয়েছে। মাঝখানের বড় গম্ভুজটির ভিতরের দিকে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে আয়তুল কুরসী লিখা রয়েছে। সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য কাজ, চিনামাটি ও মোজাইক পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। উত্তর পূর্ব কোনে রয়েছে ৪০ ফুট উচুঁ মিনার। ৪) একাত্তরের বধ্যভ‚মিঃ ১৯৭১ সালের বীর শহীদদের বধ্যভ‚মি দেখতে পাবেন জয়পুরহাট শহরের ১৫ কিঃ মিঃ উত্তর পশ্চিমে। যুদ্ধকালীন সময়ে এখানে পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প ছিল। যুদ্ধ শেষে এখানে অসংখ্য মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া যায়। প্রায় ১০ হাজার লোককে নিমর্মভাবে হত্যা করে এখানে মাটি চাপা দেওয়া হয় বলে স্থানীয় লোকদের মুখে শুনবেন। ৫) শহরের আশেপাশের জয়পুরহাট ছোট জেলা শহর। এখানে বৃটিশ আমলে নির্মিত খাস মহল ভবন আর নীলকর সাহেব পিটারের বাংলো দেখতে পাবেন। সিমেন্ট ফ্যাক্টরী আর চিনি কল আপনাকে হাত ছানি দিয়ে ডাকবে। তাই এই দুই জায়গায় যাওয়ার জন্য কিছু সময় হাতে রাখবেন। বাসে চড়ে জামালগঞ্জে যাবেন। সময় লাগবে ২০ মিঃ, এখানে দেখবেন কয়লার খনি। ৬) পাথরঘাটার প্রতœতত্ত¡ঃ পাথরঘাটা পাঁচ বিবি থানায় অবস্থিত। এটি আটপাড়া ইউনিয়নে আবস্থিত। তুলসীগঙ্গা নদীর দুই পাড়ে অজ¯্র পাথরের টুকরো ও দেয়ালের গাথুুনি ছরিয়ে আছে। অনুমতি হয় এখানে ২৫ মিটার লম্বা একটি পাথরের সেতুর অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল। চারপাশে ৪ কিঃ মিঃ এলাকা জুড়ে প্রতœ ঢিবির অস্তিত্ত¡ও বিদ্যমান। ৭) পাঁচ বিবির মাজারঃ পাঁচ বিবির মাজার দেখুন পাঁচ বিবি সদরে। এটি শহর থেকে ১০ কিঃ মিঃ উত্তরে ১৭০০ সালের দিকে পাঁচজন ধর্মপ্রাণ মহিলা ছিলেন। আমাদের দেশের অধিকাংশ জায়গায় পুরুষ মহিলার মাজার। জয়পুরহাটে গিয়ে জানবেন সেখানে জন্ম গ্রহণ করেছেন কবি আতাউর রহমান, কণ্ঠ শিল্পী ফাতেমাতুজ জোহরা, শাহ নজরুল ইসলাম, ডাঃ ফরিদ উদ্দিন, খুরশীদ আলম, মিজানুর রহমান ও নাদিরা বেগম। জয়পুরহাট গিয়ে দিনে দিনে ফিরতে পারবেন না। তাই সেখানে গিয়েই একটি ভাল আবাসিক হোটেল দেখ নিন। হোটেল আল জসিম, সৌরভ, শাপলা, কিংবা আল আমিনি উঠতে পারেন। আপনি একা ভ্রমণে গেলে যাওয়ার সময় আপনি জয়পুরহাট রেলওয়েযোগে ঢাকা য়িরতে পারেন।
Dear readers, after reading the Content please ask for advice and to provide constructive feedback Please Write Relevant Comment with Polite Language.Your comments inspired me to continue blogging. Your opinion much more valuable to me. Thank you.
0 Comments